মাতারবাড়ীতে স্বামীসহ শশুরবাড়ীর লোকজন কর্তৃক নির্যাতনের প্রতিবাদে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন

মাতারবাড়ীতে স্বামীসহ শশুরবাড়ীর লোকজন কর্তৃক নির্যাতনের প্রতিবাদে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন
এস এম শাহরিয়া,মহেশখালী মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে স্বামীসহ শশুরবাড়ীর লোকজন মিলে নির্যাতন করায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে ২০ জুলাই বুধবার বিকাল ৫ টার সময় কক্সবাজার উপকূলীয় সাংবাদিক ফোরামের মহেশখালীর চালিয়াতলীস্থ উপকূলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক ভোক্তভোগি গৃহবধূ ও তার পিতা । সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী গৃহবধূ অভিযোগ করেছেন বিগত ১৯ সালের নভেম্বরে মাতারবাড়ী সিকদার পাড়া এলাকার আবু তাহেরের পুত্র জাকের হোছাইনের সাথে একই ইউনিয়নের মনহাজী পাড়ার মোক্তার আহমদের মেয়ে ভুক্তভোগী কমরুন্নেছার মধ্যে ৮ লক্ষ টাকা দেনমোহরে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় । বিয়ের কিছু দিন পর্যন্ত সুখে শান্তিতে ছিল তাদের সংসার । কিন্তু পরধন লোভী স্বামী যৌতুকের জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপপ্রয়োগ করতে থাকে । ভুক্তভোগী গৃহবধূ তার সংসার এবং ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার পিতার বাড়ী থেকে যৌতুকের টাকা দেয় স্বামীর হাতে । এভাবে থাকতে থাকতে এক বছর পরে তাদের সংসারে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয় । এরই মধ্যে স্বামী জাকের হোছাইন সৌদি আরব যাবে বলে পুনরায় যৌতুকের জন্য স্ত্রী কমরুন্নেছা কে চাপপ্রয়োগ করতে থাকে । স্ত্রী তার পিতার বাড়ী থেকে যৌতুক এনে দিতে গড়িমসি করায় তার উপর চলে শারীরিক মারধর সহ বিভিন্ন মানসিক ভাবে নির্যাতন শুরু করে শশুরবাড়ীর লোকজন সবাই । পরে তার ব্যবহারের স্বর্ণ বিক্রি করে স্বামী জাকের হোছাইন কে বিদেশ পাঠায় । স্বামী বিদেশ গেলেও থামেনি তার উপর নির্যাতন । স্বামী প্ররোচনায় গৃহবধূ শশুরবাড়ীর লোকজন প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করতে থাকে । এবিষয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূ তার নির্যাতনের কথা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের অবগত করলে তার শশুরবাড়ীর লোকজন তাকে আর কোন দিন নির্যাতন করবে না বলে ওয়াদা করে গৃহবধূ কে তাদের ঘরে নিয়ে যায় । সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান , স্বামী বিদেশ চলে গেলেও স্বামীর প্ররোচনায় শশুরবাড়ীর লোকজন আমাকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে আবারো নির্যাতন শুরু করে । গত ২ মে প্রবাসে থাকা আমার স্বামীর নির্দেশে আমার শশুর শাশুড়ি এবং পরিবারের সবাই একত্র হয়ে ২ লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য মারধর করে এবং আমার ব্যবহারের ৪ ভরি ওজনের স্বর্ণ তারা জোরপূর্বক ভাবে কেড়ে নেয় । টাকা দিতে না পারলে শশুরবাড়ী থেকে বের হয়ে আমার পিতার বাড়ী চলে যেতে বাধ্য করে । শশুরবাড়ীর লোকজন এক কাপড়ে আমার শিশু সন্তান নিয়ে আমাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয় । এমতাবস্থায় আমি নিরুপায় হয়ে আমার পিতার বাড়ীতে আশ্রয় গ্রহন করি । এরই মধ্যে এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য লোকজন কে আমার ঘটনার বিষয়টি জানালে তারা আজ কালক্ষেপণ করতে করতে আমি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি । এবং এবিষয়ে মহেশখালী থানায় এজাহার দায়ের করতেও বিলম্ব হয় বলে জানান ভুক্তভোগী গৃহবধূ । ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন আমাকে নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় গত ১ জুলাই মাতারবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের সামনে আমার পিতাকে আমার শাশুর আবু তাহের, তার ছেলে মোহাম্মদ হোছাইন, হাছানের নেতৃত্বে ভাড়াটিয়া স্থানিয় রাসেল, জুয়েল,হানিফ, আবু তাহের,দোস্ত মোহাম্মদ, হোসেন প্রকাশ কালাইয়া,বাদশাহ মিয়াসহ ১০/১৫ জনের লাঠিসোটা নিয়ে আমার পিতাকে ব্যাপক মারধর করে । এসময় আহত অবস্থায় আমার পিতাকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে মহেশখালী হাসপাতালে ভর্তি করে । পরে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয় । এদিকে ভুক্তভোগী গৃহবধূ কমরুন্নেছা ন্যায় বিচার পেতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে জানান তিনি । কমরুন্নেছা বলেন আমার স্বামীসহ শশুরবাড়ীর লোকজন কর্তৃক নির্যাতন ও তাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি থেকে আমি ও আমার পিতাকে বাঁচাতে এবং ন্যায় বিচার পেতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি । সংবাদ সম্মলনে বক্তব্য রাখেন ভোক্তভোগি কমরুন্নেছার পিতার মোক্তার আহমদ, তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি ন্যায় বিচারের আশায় স্থানিয় গণমাণ্য ব্যক্তিবর্গসহ বিট এবং থানা পুলিশের ধারস্থ হলেও এ পর্যন্ত কোন সুরাহা না পেয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছি।

0/একটি মন্তব্য / মন্তব্য পোস্ট করুন