চোখ উঠা বা কনজাংটিভাইটিস।





সম্প্রতি চোখ উঠা বা কনজাংটিবাটিস রোগের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এতে অনেকেই শঙ্কিত হচ্ছেন ভয় পাচ্ছেন।।


এটি কি ধরনের রোগ?
এটি চোখের কনজাংটাইভায় ভাইরাস জনিত প্রদাহকারী রোগ।।


কিভাবে এই রোগ ছড়ায় ?
এটা একটা ভাইরাস জনিত অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ, রোগীর সংস্পর্শে এলে বা রোগীর ব্যবহারিত জিনিসপত্র, কাপড়, টাওয়াল ,টিস্যু, ইত্যাদি শেয়ার করলে, অথবা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে হাত দিয়ে নিজের চোখ ধরলে সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারেন।


রোগের লক্ষণ সমুহ।
প্রথমে একটা চোখ আক্রান্ত হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরবর্তীতে দ্বিতীয় চোখটিও আক্রান্ত হয়।
শুরুতে চোখে ময়লা পরার অনুভূতি,
চোখ খচখচ করা, চোখ গোলাপি বা লাল হতে পারে ,
চোখ ফুলে যেতে পারে,
চোখে প্রচণ্ড রকম অস্বস্তি লাগতে পারে,
ব্যাথা হতে পারে, ঝাপসা দেখা হতে পারে।
রোদে গেলে ব‍্যাথা লাগতে পারে।
চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে পারে, এমনকি পুঁজও বের হতে পারে!


রোগ হলে কি করবো ?
কোন আতঙ্কের দরকার নেই, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা ভাইরাস জনিত রোগ এবং পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ নিরাময় হয়ে যায়।
অহেতুক আক্রান্ত চোখ ঘষা মজা করবেন না।
চোখকে বিশ্রাম দিন,
চোখের কাজ যেমন পড়ালেখা, টিভি, মোবাইল ব্যবহার সীমিত করবেন।
নিজের এবং অন্যের চোখ ঝুঁকিমুক্ত রাখতে চোখে কালো সানগ্লাস ব্যবহার করবেন।
বেশি ব্যাথা হলে কুসুম গরম ভাব ব্যবহার করা যেতে পারে, সাথে প্যারাসিটামল বা নাপা জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।।
চুলকালে এন্টিহিস্টামিন (যেমন - এলাট্রল, এলসেট) দিনে একবার করে খাওয়া যেতে পারে ।


বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন এন্টিবায়োটি ড্রপ বা মলমের প্রয়োজন পড়ে না ।
তবে ব্যাকটেরিয়া জনিত ক্ষেত্রে বা ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ড্রপ যেমন ক্লোরামফেনিকল আই ড্রপ, সিপ্রোফ্লক্সাসিন আই ড্রপ, লমিফ্লক্সাসিন আই ড্রপ ব‍্যবহার করতে পারেন।
রাতে শুবার সময় টি মাইসিন মলম ব্যবহার করতে পারেন।।


কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন?
যদি চোখ দিয়ে আঠালো পুঁজ বের হয়, সকালবেলা চোখ খুলতে না পারেন, প্রচন্ড মাথা ব্যাথা সাথে জ্বর হলে , চোখে ঝাপসা দেখা গেলে কিংবা এক সপ্তাহের মধ্যে রোগীর কোন উন্নতি না হলে চোখের ডাক্তার দেখাবেন।। যাদের অন্য জঠিল রোগ আছে তারা ও ডাক্তারের শরনাপন্ন হবেন দেরী না করে।


আর কোন কারনে চোখ লাল হতে পারে ?
চোখের অন্য অসুখের কারনে ও চোখ লাল হতে পারে যেমন ইভুয়াটিস স্কেলেরাইটিস এপিস্কেলেরাইটিস। সেক্ষেত্রে অবশ‍্যই চক্ষু ডাক্তার দেখিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।


প্রতিরোধ কিভাবে করবেন?
এই ধরনের রোগীর সংস্পর্শে এলে ভালো করে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
বাইরে গেলে চোখে হাত দিবেন না।
রোগীর ব‍্যবহ্নত জিনিস পত্র ভালো করে ধুয়ে ফেলতে বলুন ও পারতপক্ষে ধরবেন না।


ডাঃ জয়ব্রত দাশ।

0/একটি মন্তব্য / মন্তব্য পোস্ট করুন