হোয়ানকে সরকারী জমি দখলে যাচ্ছে, প্রশাসন নিরব ভুমিকায়
বিগত বিএনপি সরকারগুলোর আমলে মহেশখালীতে প্যারাবন কেটে সরকারি জমি দখল করে চিংড়ী ঘের করার উৎসব শুরু হয়েছিলো। সেবার জনৈক ডা. মুজিব নামের এক ব্যক্তি প্যারাবন কেটে এই দখলযজ্ঞ শুরু করেছিলেন এবং বিএনপির সাবেক এমপি আলমগীর ফরিদের আমলেই তার পূর্ণতা পায়। সেকালের বিএনপি ও আলমগীর ফরিদের অনেক নিকটজন এখন একরকে একর সে সব জমির মালিক। সে সময় এ সব বিষয়গুলো বেশ ফোকাসে চলে এসেছিলো। প্রতিক্রিয়াও হয়েছিলো বেশ।
তবে সে থেকে এই পর্যন্ত থেমে নেই এই প্যারাবন নিধন ও সরকারি জমি দখলের কাজ। বার বার এ কাজে সবচেয়ে নাটকীয় ভূমিকায় দেখা গেছে সরকারের কর্তৃপক্ষীয় প্রতিষ্ঠান বন বিভাগকে। বিশাল বিশাল অংকের অবৈধ লেনদেনের বিপরীতে তারাই সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে ভূমিখেকোদের।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও থেমে নেই সেই একই দখলযজ্ঞ। অনেকটা নীরবে ধীরলয়ে চলছে এই দখল নৈরাজ্য। যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার সুযোগে দূর উপকূলীয় এলাকায় টানা কাটা হচ্ছে, রাসায়নিক প্রয়োগ করে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্যারাবন- দ্বীপরক্ষা বাইন গাছ, উদ্ভিদ প্রকৃতি। দেওয়া হচ্ছে বাঁধ, তৈরি করা হচ্ছে চিংড়ী জমি। এ সব দেখেও যেনো কেউ দেখছে না। এখন সেভাবে ফোকাসও পাচ্ছে না তা সব। তৈরি করা হচ্ছে ভয়ের সংস্কৃতি। সম্ভাব্য সব অর্গান ম্যানেজ করেই চলে এই নৈরাজ্য।
নেহায়েত বিষয়গুলো জানাজানি হলে গণমাধ্যমকে একটি 'পিউরম্যান' ধরণের বক্তব্য দিয়ে, ছবিসর্বস্ব অভিযান দেখিয়ে কিংবা ভূমিখেকোদের থেকে তুলনামূলক দূর্বল ব্যক্তিদের নামের তালিকা বাছাই করে দায়পারমূলক একটি মামলা করেই কর্তব্য শেষ করেন। যাতে কাজের কাজ কিছুই হয় না। এই 'সিস্টেম' দিয়েই অনেকটা প্রতিষ্ঠা করে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্টদের।
গভীর ভাবে খোঁজ নিতেই দেখা যায়- এ সব দখলকাণ্ডের সাথে দ্বীপে শীর্ষ নেতা ও তাদের নিটকজনরাই থাকেন এই অনৈতিক সম্পদ বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায়। দ্বীপের বড়োলোক ও তাদের স্বজনদের সম্পদশালী করে দেওয়ার এ প্রতিষিদ্ধ তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে।
দ্বীপের পশ্চিমের বিশাল এলাকা থেকে শুরু করে পূর্বসহ সবদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এই ক্ষমতাচর্চিত অবৈধ দখলের প্রতিযোগিতা। অর্থ, ভয় ও ক্ষমতার মিশেলে নীরবই থেকে যায় সব।
এভাবে একবার দখল পেতে পারলেই আর পিছনে তাকাতে হয় না, সরকারি সম্পদের উপর ব্যক্তির মালিকানা প্রতিষ্ঠা পেয়ে একে একে বড় লোক হয়ে উঠছে ক্ষমতা ও ক্ষমতার আশপাশে থাকা ব্যক্তিগুলো।
আমাদের মনে রাখা জরুরি -'এই সময় -সব সময় না, আগামীতেও এই দ্বীপে মানুষকে বসবাস করতে হবে।'

Post a Comment