অন্ধকার দ্বীপের আলোকবর্তিকা
কক্সবাজার জেলার অন্যতম একটি দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া। হযরত শাহ আবদুল মালেক শাহ (রাঃ) পূণ্য ভূমি কুতুবদিয়া। চারদিকে সমুদ্র জলরাশি দ্বারা বেষ্টিত ছোট্ট একটি দ্বীপ কুতুবদিয়া। বিখ্যাত বাতিঘর এবং বায়ু বিদ্যুতের সুখ্যাতি রয়েছে সারাদেশে।
কুতুবদিয়া দ্বীপের থানার বয়স গুনে গুনে ১০৪ বছর পূর্ণ হলেও এখনো লাগেনি আধুনিক বিদ্যুতের ছোঁয়া। সেই সাথে যোগাযোগ ব্যবস্হার উন্নতি, তথ্য-প্রযুক্তির আবাধ বিচরণ এবং সুযোগ-সুবিধা এখনো আসেনি এই ছোট্ট দ্বীপে । কিন্তু পিছিয়ে নেই শিক্ষার আলোয়।২০২২ সালের কক্সবাজার জেলার প্রাথমিক শিক্ষার সর্বশ্রেষ্ট বিদ্যাপীঠের মুকুট অর্জন করেছে কুতুবদিয়া দ্বীপের উত্তর লেমশীখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।এই অর্জন নিঃসন্দেহে কুতুবদিয়া বাসীর জন্য গৌরবের এবং অহংকারের।
সেই সাথে একই বিদ্যালয়ের ছোট্ট রিচি পুরো নাম ইউশা মেহেজাবিন রিচি ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জাতীয় পর্যায়ে রচনা প্রতিযোগিতায় সারাদেশের মধ্যে ২য় স্থান অর্জন করেছে। তার এই অর্জন কুতুবদিয়া নয়,কক্সবাজার জেলা নয় বরং পুরো চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য গৌরবের।এই ছোট্ট রিচি কত শত শত জেলা শহর এবং বিভাগীয় শহরের বাঘা বাঘা স্কুলের হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে আলোক মশাল জ্বালিয়ে নিজের সগৌরবে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট।
সাথে সাথে তার ভবিষ্যৎ গৌরব উজ্জ্বল কামনা করি।রিচি আমার দেখা সত্যিকারের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী।সে প্রথম শ্রেণি থেকে আমাদের রুম টু রিডের সকল ধরনের গল্পের বই গুলো নখদর্পনে পড়ে শেষ করেছে।তার প্রচুর গল্পের বই পড়ার আগ্রহ ছোটকাল থেকে লক্ষ্য করেছি। সে তার ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল এবং বুক ক্যাপ্টেন।অত্র বিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব মোছাম্মৎ ফারহানা ইয়াছমিন একজন কুতুবদিয়া উপজেলা শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক। একজন শিক্ষকের সততা,ন্যায় নিষ্ঠা এবং স্বচ্ছতার আজকের ফসল।তিনি একজন প্রচন্ড অমায়িক এবং বিদ্যালয়ের জন্য সর্বাক্ষণিক নিবেদিত প্রাণ।তিনি সব সময় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বদ্ধপরিকর।
অত্র বিদ্যালয়ে ১০ জন শিক্ষক রয়েছেন।একেক জন এককে গুণের অধিকারী।শিক্ষকতা যে একটি মহানপেশা, একটি মহৎ গুণ বা জাতির বিবেক এবং জাতি গড়ার কারিগর। উনাকে দেখেই সত্যিকারের শিক্ষকতা বা আমার অতীতের ফেলে আসা শিক্ষকদের স্মরণ করি।হঠাৎ আমার প্রিয় স্যারদের জন্য চোখের কোনায় দুই ফোঁটা অশ্রু জমা হয়ে গেলো । মনে পড়ে গেলো মরহুম ফরিদ স্যার এবং নুর আহমেদ স্যারের কথা ;যাদের অবদানে আমি এখনো দাঁড়িয়ে আছি।যে দুই জন শিক্ষক না হলে আমি প্রাথমিকের গন্ডিও পেরোতেই পারতাম না।তাঁরা শুধু আমার শিক্ষক নন,আমার আর্দশ শিক্ষক আমার পিতা।সেই সকল আর্দশ শিক্ষকদের চরণে সশ্রদ্ধ সালাম।
-মুহম্মদ রিদোয়ানুল হক
Post a Comment