আর বিষয়টি মাথায় রেখে জাতীয় শোক
দিবসের অনুষ্ঠানমালা ঘিরে ধানমণ্ডির ৩২
নম্বরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে
জানিয়েছেন তিনি।
জাতীয়
শোক দিবসের আগের দিন ধানমণ্ডির
৩২ নম্বরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঘুরে দেখার পর
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন শফিকুল
ইসলাম।
তিনি
বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী… উনি বাংলাদেশের কেন,
আমার মনে হয় পৃথিবীতে
এখন যারা প্রধানমন্ত্রী আছেন,
তাদের ভিতরে সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে
থাকেন উনি।”
পুলিশ
কমিশনার বলেন, “উনার উপরে একাধিকবার
হত্যা চেষ্টা হয়েছে এবং যারা এই
পরিকল্পনাগুলো করেছিল, প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার জন্য, যাবতীয় যত চেষ্টা, সবগুলোই
করেছেন।… মহান আল্লাহ উনাকে
... উনার হায়াত রেখেছেন, সেই জন্য উনি
আমাদের মাঝে আছেন।”
১৫ অগাস্টের কর্মসূচি ঘিরে ঝুঁকি আরও
বেশি থাকে মন্তব্য করে
শফিকুল ইসলাম বলেন, “আপনারা জানেন যে এটি এমন
একটি সেট প্রোগ্রাম, উনি
(প্রধানমন্ত্রী) যতদিন জীবিত থাকবেন, আওয়ামী লীগ যতদিন... এই
বাংলাদেশের যতদিন অস্তিত্ব থাকবে, প্রতি ১৫ অগাস্ট তিনি
এখানে আসবেন। ফলে যারা ষড়যন্ত্র
করতে চায়, তাদের কিন্তু
‘দশ বছর’ ধরেও পরিকল্পনা
করার সুযোগ আছে।”
ওই ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখেই নিরাপত্তার পরিকল্পনা করা হয়েছে জানিয়ে
পুলিশ কমিশনার বলেন, “আন্তর্জাতিক পেক্ষাপট, দেশের রাজনৈতিক পেক্ষাপট, সবকিছু মিলে আমরা মনে
করি যে নিরাপত্তা ঝুঁকিটা
বেশ প্রকট। আমরা সেদিকে দৃষ্টি
রেখেই আমরা উনার (প্রধানমন্ত্রী)
নিরাপত্তা ছক সাজিয়েছি।”
সেই
নিরাপত্তা কেমন হবে, সঙ্গত
কারণেই তা প্রকাশ করতে
চান না জানিয়ে শফিকুল
ইসলাম বলেন, “দৃশ্যমানের মধ্যে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আমাদের বুদ্ধিতে, প্রশিক্ষণে, অভিজ্ঞতায় সর্বোচ্চ যেটা করা সম্ভব,
সেটা করা হয়েছে।”
তবে
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ কমিশনার বলেন, ১৫ অগাস্টের এবারের
কর্মসূচি ঘিরে জঙ্গি হামলার
হুমকির কোনো তথ্য এখনও
সরকারি কোনো সংস্থার কাছে
নেই।
তিনি
বলেন, “শুধু ঢাকা মহানগরে
নয়, সারা বাংলাদেশে যারা
পুলিশের কাজ করেন, অগাস্ট
এলেই সমস্ত দিক থেকে সতর্ক
হয়ে যান। কারণ এই
মাসটি বাঙালি জাতির জন্য কলঙ্কিত মাস।
শুধু জাতির পিতাকেই হত্যা করা হয়নি, এ
মাসে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে পুরো আওয়ামী
লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার একটি চেষ্টা
হয়েছিল। সারাদেশে একযোগে পাঁচশত স্পটে বোমা হামলা হয়েছিল।
এছাড়া অগাস্টে আরো বেশ কিছু...
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল।”
১৫ অগাস্ট শোক পালন করতে
হাজার হাজার মানুষ ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে যান।
তাদের নিরাপত্তার জন্য ভেন্যুগুলো ডগ
স্কোয়াড ও মাইন ডিটেক্টরের
মাধ্যমে ‘সুইপিং’ করা হয়েছে এবং
পুরো এলাকা সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারির আওতায় রাখা হয়েছে বলে
জানান ঢাকার পুলিশ প্রধান।
তিনি
বলেন, ধানমণ্ডি লেকে নৌ পুলিশ
ও নৌ বাহিনীর পেট্রোল
টিম থাকবে। দৃশ্যমান প্রতিটি জায়গা নিরাপরাপত্তা বলয়ের ভেতরে রাখা হবে।
গত কয়েক দিন ধরে
আশপাশের প্রতিটি আবাসিক হোটেল ও মেসে একাধিকভার
নিরাপত্তা তল্লাশি চালনো হয়েছে জানিয়ে কমিশনার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা
নিবেদন শেষে বনানী কবরস্থানে
যাবেন, সেখানেও একই ধরনের নিরাপত্তা
ব্যবস্থা থাকবে।
৩২ নম্বরে মানুষ প্রবেশ করতে পারবে রাসেল
স্কয়ারের দিক দিয়ে, আর
পশ্চিম দিক দিয়ে বের
হয়ে যাবে। চারদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর সঙ্গে সঙ্গে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ব্যারিকেড থাকবে রাস্তায়।
এর বাইরে আশপাশের ভবনের ছাদে পুলিশ সদস্যদের
পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। ৩২
নম্বরে ঢোকার সময় আর্চওয়ে ও
মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে।
শ্রদ্ধা
জানাতে যারা ৩২ নম্বরে
যাবেন, তাদের ব্যাগ বা ব্যাকপ্যাক সঙ্গে
নিয়ে না যেতে অনুরোধ
করা হয়েছে পুলিশের তরফ থেকে।
পুলিশ
কমিশনার বলেন, “আমাদের বম ডিসপোজাল ও
সোয়াট টিম সবসময় প্রস্তুত
থাকে। এখানে স্থাপিত কন্ট্রোলরুম থেকে সবকিছু মনিটর
করা হবে।”
৩২ নম্বরের চারপাশ ঘিরে নিরাপত্তা বলয় থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “কোভিডের ঝুঁকি চলে গেছে বলতে পারি না। যারা এখানে আসবেন, অনুরোধ করব, ন্যূনতম নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে যেন একটি মাস্ক পরে আসেন। কারণ এখনে লাখ লাখ লোক জমায়েত হবে।”
Post a Comment